নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনার কারণে সারা দেশে যে সাধারণ ছুটি চলছিল সেটি তুলে নিয়েছে সরকার। লকডাউনও শিথিল হয়ে গেছে। ফলে রাজধানীতে মানুষের উপস্থিতি যেমন বেড়েছে, তেমনি বাজারেও ক্রেতার সমাগম বেড়েছে। আর এ সুযোগে ব্যবসায়ীরা আরেক দফা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন চাল, ডাল, শাকসবজিসহ অনেক রকম পণ্যের। সাধারণ ছুটির মধ্যে বাজারে ক্রেতার উপস্থিতি কম থাকায় বিক্রেতারা পণ্যও বিক্রি করেছেন কিছুটা কম দামে, কিন্তু এখন বিক্রি করছেন বাড়তি দামে। সপ্তাহের ব্যবধানে সবজিভেদে ৫-২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে দাম। সবজির সঙ্গে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে শাকের বাজার। অন্যদিকে বাজারে মুরগির দাম কমলেও বেড়েছে ডিমের দাম। ডিম ডজনে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। অপরিবর্তিত রয়েছে গরু-খাসির মাংস, চাল, ডাল, আলু, পেঁয়াজ, রসুন, আদা ও তেলের দাম। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে এসব চিত্র উঠে এসেছে।
রাজধানীর বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতিকেজিতে ৫-২০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি রয়েছে সবজির দাম। কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি টমেটো (প্রকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৪০-৬০ ও পেঁপে ৪০-৬০ টাকা কেজি দরে। ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে প্রতিকেজি কাঁকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০-৫০, করলা ৩০-৪০, উস্তা ৪০-৫০, ঢেঁড়স ৩০-৪০, কচুর লতি ৪০-৫০, বেগুন ৪০-৬০, চিচিঙ্গা- ধুন্দল-ঝিঙা ৪০-৫০, শসা ২৫-৩০, পটোল ৪০-৫০ টাকায়। প্রতিকেজিতে ১০-২০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে ধনিয়াপাতা বিক্রি হচ্ছে ৬০-৮০, পুদিনা পাতা ৮০-১০০, কাঁচামরিচ ৪০-৬০, প্রতিপিস লাউ ৪০-৫০, জালি (চালকুমড়া) ৩০-৪০, বাঁধাকপি ২০-৩০, বাঁধাকপি (গ্রিন) ৫০ টাকায়। এ ছাড়া প্রতিহালি কলা (আকারভেদে) ২০-৩০, প্রতিহালি ছোট লেবু ১০-১৫, বড় সাইজের লেবু ২০-২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে শাকের বাজারে। প্রতিআঁটিতে (মোড়া) ২-৫ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। প্রতিআঁটি (মোড়া) কচুর শাক বিক্রি হচ্ছে ১০, লালশাক ১০-১২, মুলাশাক ১০-১৫, পালংশাক ১৫, লাউ ও কুমড়ার শাক ২৫-৪০, পুঁইশাক ১৫-২০ টাকায়।
অপরিবর্তিত রয়েছে গরু ও খাসির মাংসের দাম। এসব বাজারে প্রতিকেজি গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৫৮০-৬০০, মহিশের মাংস ৬০০, খাসির মাংস ৮০০, বকরি ৭৫০ টাকা কেজি দরে।
গরু-খাসির মাংসের দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কমেছে মুরগির বাজার। কেজিতে ২০-২৫ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি বয়লার বিক্রি হচ্ছে ১৩৫-১৪০ টাকা কেজি দরে। কেজিতে ১০-২০ টাকা কমে প্রতিকেজি লেয়ার ২০০, সাদা লেয়ার ১৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ২০-৩০ টাকা পর্যন্ত কমে প্রতিকেজি সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৫০-২৬০, দেশি মুরগি ৫০০-৫৫০ টাকা কেজি দরে।
বেড়েছে ডিমের দাম। ডজনে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে ডিমের দাম। প্রতিডজন লাল ডিম (আকারভেদে) বিক্রি হচ্ছে ৯০-৯৫, দেশি মুরগির ডিম ১৪০-১৫০, সোনালি মুরগির ডিম ১২০-১৩০, হাঁসের ডিম ১১৫-১২৫, কোয়েল পাখির ডিম প্রতি ১০০ পিস ২০০ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে।
অপরিবর্তিত রয়েছে মাছের বাজার। বাজারে প্রতিকেজি কাঁচকি মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩৫০-৪০০, মলা ৩৫০-৪০০, ছোট পুঁটি ৫৫০, টেংরা ৮০০, দেশি টেংরা ৫০০-৫৫০, শিং (আকারভেদে) ২৮০-৫০০, পাবদা ৩০০-৪৫০, চিংড়ি (গলদা) ৪০০-৭০০, বাগদা ৫০০-১০০০, হরিণা ৩৫০-৫৪০, দেশি চিংড়ি ৩০০-৪৫০, রুই (আকারভেদে) ২২০-৩২০, মৃগেল ১৮০-৩০০, পাঙ্গাশ ১৩০-১৭০, তেলাপিয়া ১৩০-১৬০, কৈ ১৬০- ১৮০, কাতল ১৮০-৩০০ টাকায়। এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৯৫০-১০০০, ৭৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ৭০০-৭৫০ টাকা। ছোট ইলিশ আকারভেদে ৩০০-৪৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
এসব বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫, রসুন ১২০-১৫০, আদা (মানভেদে) ১৫০-১৮০, কাঁচামরিচ ৪০-৬০ টাকায়। বাজারে প্রতিলিটার খোলা সয়াবিন তেল (লাল) বিক্রি হচ্ছে ৯৫-১০৫, খোলা সাদা সয়াবিন ১০০, খোলা সরিষার তেল ২০০ টাকায়। প্রতিকেজি মিনিকেট (নতুন) চাল ৫৮, মিনিকেট পুরান ৬০, বাসমতি ৬০-৬২, আটাশ চাল ৪৪, এক সেদ্ধ ৪০, পাইজাম ৪০, পোলাওর চাল ১০০-১০৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
প্রতিকেজি ডাবলি ডাল বিক্রি হচ্ছে ৪৫, অ্যাঙ্কর ৫০, দেশি মসুর ডাল ১২০, মসুর (মোটা) ৮০ টাকা কেজি দরে। পেঁপে-টমেটোর দাম যেন আকাশছোঁয়া হয়েছে। অন্য সবজির দামও বেশি রাখা হচ্ছে, যার কোনো যুক্তি হতে পারে না। ক্রেতার পকেট কাটা হচ্ছে দেদারসে।